Home » 2011 » January » 12 » নড়াচড়া করে যেসব সেতু – ১
11:18 PM
নড়াচড়া করে যেসব সেতু – ১

নড়াচড়া করে যেসব সেতু – ১

লেখাটি আপনার পছন্দ হয়েছে?

আমরা সচারাচর সে সমস্ত সেতুগুলি দেখিয়া থাকি তাহারা নট নড়ন-চড়ন হইয়া স্থির পড়িয়া থাকে। কিন্তু কিছু কিছু সেতু রহিয়াছে যাহারা নট নড়ন-চড়ন হইয়া পরিয়া থাকে না মোটেই, বরং বেশ নড়ন-চড়ন দিয়া থাকে। আজিকের এই লেখা সেই সমস্ত নড়ন-চড়ন সেতুদিগকে লইয়াই।

সেতু কোথায় দেয়া হয়?
ইহা একটি হাস্যকর প্রশ্ন। সকলেই জানে, সেতু সাধারণত নদী বা খাল অথবা জলের উপরেই দেয়া হইয়া থাকে। যাহাতে করিয়া জলের দুইধারের পথের মিলন সেতুবন্ধনে যান ও জন পারাপার হইতে পারে। অবশ্য আজকাল স্থলেও কিছু সেতু নির্মাণ করা হইতেছে যাহাদিগকে (ফ্লাইওভার) উড়ালসেতু নামে অবহিত করা হয়। এই সমস্ত সেতু দিয়া উড়াল দেয়া যায় কিনা তাহা আমার জানা নাই, তবে উড়ালসেতুর নিচের পথে যানজটকে টপকাইয়া সহজেই চলিয়া যাইবার জন্যই এর ব্যবহার। যদিও আমাদের দেশে এই সুযোগ খুব একটা পরিলক্ষিত হইতেছে না। যাহাহোক আমাদের আজিকের এই লেখার উদ্দেশ্য উড়ালসেতু নহে, অন্য আরেকদিন ইহার সম্পর্কে লেখা যাইবে। আজ বরং আমরা নড়ন-চড়ন সেতু সম্পর্কে কিছু জানিবার চেষ্ঠা নেই।

নড়ন-চড়ন সেতু
"সেই সমস্ত সেতুকেই আমরা নড়ন-চড়ন সেতু বলিবো যাহারা জলযানসমূহকে তাহার নিচ দিয়া চলিয়া যাইতে দিবার উদ্দেশ্যে নিজেরা নানান ভাবে নড়াচড়া করিয়া থাকে।”

নানান ধরনের নড়ন-চড়ন সেতু দেখিতে পাওয়া যায়। একে একে সকল প্রকার নড়ন-চড়ন সেতু লইয়াই লেখার ইচ্ছা রহিয়াছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে যেই ধরনের নড়ন-চড়ন সেতু লইয়া লিখিতেছি তাহাকে বলা হয় "টানা-সেতু” বা "Drawbridge” । (বিশেষ দ্রষ্টব্য: বাংলা নামের প্রতি খুব একটা শ্রদ্ধা না রাখিলেও চলিবে।) নড়ন-চড়ন সেতুগুলি কি ভাবে নড়াচড়া করিয়া থাকে তাহার উপর ভিত্তি করিয়াই তাহাদেরকে নামকরণ করা হয়।

"টানা-সেতু” বা "Drawbridge” একখান ছবি দেখেন

2010-12-05_164336

টানা-সেতুঃ যে সমস্ত সেতুকে একপাশ হইতে শক্ত কাছি বা দড়ির সাহায্যে টানিয়া অন্য মাথা তুলিয়া ফেলা হয় সেই সমস্ত সেতুকে "টানা-সেতু” বলিয়া থাকে।

টানা-টানির বিষয়টি মোটামুটি এই রকম

2010-12-05_164408

আদিকাল হইতেই এই সমস্ত টানা-সেতুর ব্যবহার পরিলক্ষিত হইয়া আসিতেছে। সেই সময়ে টানা সেতুগুলি ব্যবহার করা হইতো দূর্গগুলিতে।

2010-12-05_164425

দূর্গের চারিপাশে পরিখা খনন কররিয়া পরিখার নিচে চোখা চোখা লৌহদণ্ড অথবা কাষ্টদণ্ড পুতিয়া রাখা হইতো। কখনবা সেইখানে পানি দিয়া পরিপূর্ন করিয়া রাখা হইতো। আবার সেই পানিতে কুমীর বা বিষাক্ত সাপও ছেড়িয়া রাখিতো। সেই পরিখার উপর দিয়া দূর্গে প্রবেশের প্রবেশদ্বারে এই "টানা সেতু” স্থাপন করা হইতো। এগুলিকে "দূর্গ টানা-সেতু” বলিতে পারি আমরা। তাহাছাড়া বড়বড় প্রাসাদেও এই ধরনের "টানা সেতুর” ব্যবহার দেখা যাইতো।

আদিকালেই এই সমস্ত "টানা-সেতুর” ব্যবহার শেষ হইয়াছে ভাবিলে ভুল করিবেন। এই আজিকের সময়েও সেই আদিকালের "টানা-সেতুর” আধুনিক সংস্করণ দেখিতে পাওয়া যায়। তবে ইহারা দূর্গ বা প্রাসাদ ছাড়িয়া নদী বা খালের উপর স্থান করিয়া লইয়াছে। নিচে তাহাদের কিছু নমুনা পেশকরা হইলো।

2010-12-05_164441

2010-12-05_164501

2010-12-05_164530

উপরের সেতুটির নাম "Slauerhoffbrug” সেতু, যাহা Netherlands অবস্থিত।
শতর্কিকরণঃ সেতুর নাম উচ্চারণ করিবার কালে দুই-একটা পোঁকে খাওয়া দূর্বল দাঁত পরিয়া গেলে লেখক দায়ি হইবে না। নিজ দায়িত্বে উচ্চারণ করিবেন।

Gloucester dock-এর টানা-সেতু

2010-12-05_164605

এবার দেখেন কিছু টানা-সেতুন নমুনা যাহাদের মাঝখান হইতে দুই ভাগ হইয়া যায়।

2010-12-05_164626

Willamette নদীর উপরে টানা-সেতু

2010-12-05_164649

Amsterdam টানা- সেতু

2010-12-05_164726

ইহা Amsterdamএর Magere Brug টানা সেতু।

2010-12-05_164756

Views: 535 | Added by: zazafee | Rating: 0.0/0
Total comments: 0
Name *:
Email *:
Code *: