11:07 PM এক বিভিষিকাময় রাত্রি যখন আমাকে প্রায় খেয়ে ফেলেছিল |
এক বিভিষিকাময় রাত্রি যখন আমাকে প্রায় খেয়ে ফেলেছিলসে
রাতে আমার আর ঘুম এলোনা। যা দেখে এসেছি তাতে ঘুম আসার কথা নয়। অন্ধকার
ঘনিয়ে এসেছিল বলে আমি একটু দ্রুত বাসায় ফিরছিলাম। বাসায় ফিরে আমার অতি
আদরের ছোট ভাই জাহিনকে অংক শেখাতে হবে। আমি আমার এই ভাইটাকে খুব
ভালবাসি।উপরে যে ছবিটি দেখা যাচ্ছে
এটি আমার প্রিয় ভাই জাহিনের। যাই হোক আমি আমার বন্ধু বাশারদের বাসায়
ছিলাম। বাশারদের বাসা শহর থেকে অনেকটা দূরে। তাই ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে
গিয়েছিল। আমি তখন কেবল মাত্র তমাল তলা স্কুলের পাশের বট গাছটার নিচে এসেছি
ঠিক এমন সময় আমার মটর সাইকেলের স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেল। সাধারনত আমি কোন
কিছুকেই ভয় পাইতাম না। তবে সেদিনের কথা আলাদা । একেতো অন্ধকার তার উপর
তমালতলা স্কুলের ভয়ংকর বটগাছের নিচে। এই গাছের তলায় এেস আমার আগে এমন কেউ
নেই যে ভয় পায়নি। এর আগে অন্যদের ভয় পাবার কথা শুনে আমি তাচ্ছিল্য করেছি আর
আজ আমার নিজের শরীরেই ভয়ের বাসা। আমি সাথে কাউকে নিয়ে আসিনি। এমনকি আমার
সাথে আমার এই ছোট্ট ভাই জাহিন যদি থাকতো তাহলে আমি কোন কিছুতেই ভয় পেতাম
না। আমি বাইক থেকে নেমে ব্যাপারটা দেখার আগেই একবার স্টার্ট দেবার চেষ্টা
করলাম কিন্তু স্টার্ট নিলনা। এভাবে আরো কয়েকবার চেষ্টা করে করে ক্ষান্ত
দিয়ে বাইক থেকে নেমে এটা সেটা চেক করছিলাম। ঠিক এমন সময় পাঠক বিশ্বাস করবেন
কিনা জানিনা ঠিক এমন সময় একটা হাত আমার কাধে এসে ঠেকলো। সেই হাতে কোন
মাংস নেই আর সে যে কি ঠান্ডা হাত তা বলে বোঝাতে পারবোনা। আমি ভয়ে শিউরে
উঠলাম। পিছন ফিরে তাকানোর সাহস আমার ছিলনা। মনে হচ্ছিল আমার পিঠে কেউ একজন
এক খন্ড বরফ এনে জোর করে ধরে রেখেছে। আমি কথা বলতে ভুলে গেলাম। সেই ভয়ংকর
প্রানীটা খ্যাস খেসে গলায় কথা বলে উঠলো। কিরে আমাদের মোটেই তোয়াক্কা করিস
না ব্যাপার কি। আমি একটু একটু করে সাহস সঞ্চার করে তাকে বললাম না মানে আমি
অবিশ্বাস করিনা। সে আমাকে ধমক দিলো। তারপর আমাকে শুন্যে তুলে আকাশের দিকে
উঠতে থাকলো। আমি চোখ বন্ধ করে থাকলাম। মনে হচ্ছিল আমার শরীরে কোন প্রাণ
নেই। একসময় দেখলাম্ আমি এমন একটা ঘরে আছি যার চারপাশে অনেক কংকাল আর
মানুষের দেহাবশেষ। আমার রক্ত আগেই হিম হয়ে ছিল এবার তা একেবারে হিমাংকের
নিচেয় নেমে গেল। আমি মনে মনে আল্লাহর নাম নিতে থাকলাম। বলতে লাগলাম যদি
আল্লাহ আমাকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করেন তবে আমি একটা ভাল কাজ করবো। মনে মনে
কলেমা জপছি এমন সময় মাথায় শিং আছে এমন তিনটি ভুত এসে হাজির। তারা খাটি
বাংলা ভাষায় কথা বলছে। একজন বললো একে কখন খাব। অন্যজন বললো এেতা অস্থির
হচ্ছিস কেন। মনে হয় কত বছর মানুষের মাংস খাসনা। প্রতিদিনতো একজন দৃজনের
মাংস খাস তবে আজ কেন তর সইছেনা। এ কথা শোনার পর আমার কি অবস্থা হয়েছিল পাঠক
তা একটু ভেবে দেখুন। আমি দোয়ায় ইউনুস জপতে লাগলাম। একটা বোটকা গন্ধ আমার
নাকে এসে লাগলো এবঙ সাথে সাথে আমি আল্লাহ বলেই জ্ঞান হারালাম। পরে আর কিছুই
মনে নেই। জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে। আমার আদরের
ভাই জাহিন,ছোট বোন ফারিন আর একদম ছোট ভাই জামিল আমার বিছানার পাশে বসে আছে।
সবার চোখে পানি। আমার জন্য এরা অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমি কি হয়েছিল মনে করার
চেষ্টা করতে লাগলাম। একটু একটু করে মনে আসতে লাগলো। তবে বাকিটুকু জাহিন
বললো। আমাকে নাকি শোলাকিয়া ঈদগাহের দক্ষিন পাশে ব্রিজের নিচে খুজে পেয়েছি।
বেদম জোরে মোটর সাইকেল চালাচ্ছিলাম আর তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে গিয়ে পরি
এবঙ ব্যাথায় চিতকার করে উঠে জ্ঞান হারাই। পাশের বাসার লোকেরা আমাকে উদ্ধার
করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বাবাকে খবর দেয়া হয়। আমি সবাইকে বলি আমি তো
জোরে বাইক চালাইনি। আমি হঠাত দেখলাম আমার বাইক বন্ধ হয়ে গেল আর তখন একটা
কংকাল এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেল আমাকে খেয়ে ফেলবে বলে। ফারিন তখন বুঝিয়ে
বললো আমি আসলে অতি ভোজনের ফলে ক্লান্ত হয়ে যাবার কারণে আমার হ্যালুসিনেশন
হচ্ছিল আর সে অবস্থাতেই বাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম তাই
আমার কাছে এসব মনে হয়েছে। আমার অবশ্য এসব কথা বিশ্বাস হচ্ছিলনা। কিন্তু
কিছুই করার নেই। আমার কথা কারো বিশ্বাসই হলোনা। জগতে কত কিছু ঘটে তার কোন
হিসেব নেই। সেই থেকে আমি একা বাসা থেকে রাতে অন্তত বের হইনা। অন্তত জাহিনকে
নিয়ে বের হই।
|
|
Total comments: 0 | |