Home » 2012 » January » 30 » বন্ধু সভা
2:08 PM
বন্ধু সভা

বন্ধু সভা

 

কদিন পরে দেখবে তুমি বদলে যাবে সব

সবার মুখে আজ শোনা যায় বদলে যাবার রব।

 

আমরা যখন বদলে গেছি আর কি তবে ভয়

অন্ধকারটা কেটেরই যাবে জয় হবে নিশ্চয়।

 

সিডর আসুক রেশমি আসুক সেথাও আমরা আছি

ওদের সবার দুখ নিয়ে ওদের সাথে বাচি।

 

শীতের দিনে সাত সকালে বৃদ্ধা-শিশু কাপে

অভাব বলে শীতের কাপড় দেয়না কারো বাপে।

 

 কনকনে সেই শীতের রাতে দুখীর দরজাতে

আমরা ছুটি বন্ধু হয়ে কম্বল কিছু হাতে।

 

দরজাতে নক করতেই বেরিয়ে আসে দুখী

কম্বল পেয়ে ওরাই যেন সবচে বড় সুখী।

 

বৃদ্ধা বলো জোয়ান বলো শিশু কিশোর নারী

আমরা সবাই কাধ মিলিয়ে বন্ধু হবো তারি

 

মানুষগুলোর দুখ মোদের হৃদয় ছুয়ে ছুয়ে

ভালোবাসার পরশ দিয়ে দুখ দেবে ধুয়ে।

 

বন্ধু হয়ে সেই যে মোরা চলতে শুরু করি

দুখের সাগর আমরা সেথা সবচে বড় তরী।

 

সেই তরীতে কামার কুমোর সবাই  ছুটে আসে

দুখের দিনেও আমরা থাকি সব মানুষের পাশে।

 

সূর্য ওঠার সাথে সাথে জ্বালিয়ে প্রথম আলো

দুখের দিনেও রংধনুটা সাত রঙে রাঙালো।

 

মাদক সবাই না বলেছি মিছিল করে করে

মাদক থেকে সারা জীবন থাকবো দূরে দূরে।

 

নিজে যেমন বদলে গেছি বদলে দেব দেশ

দূর্নীতি বা রাহাজানি করবো সবই শেষ।

 

এসিড লেগে একটা মুখও ঝলসাবেনা আর

আমার এখন বন্ধু হয়ে শপথ করি তার।

 

আমরা করি অন্যদেরও শপথ নিতে বলি

এসো সবাই বন্ধু হয়ে আলোর পথে চলি।

 

সেই আলোতে রাঙ্গিয়ে দেব দেশের চারিধার

বন্ধু হবো দুখ ব্যাথা থাকবেনাতো আর।

 

এই যে ছেলে অনাহারী রোগ ভরা তার দেহ

এতো মানুষ থেকেও তবু খোজ নেয়না কেহ।

 

বন্ধু হয়ে আমরা সবাই দাড়াই গিয়ে পাশে

আদর পেলে ওরাও ঠিকই মিষ্টি করে হাসে।

 

সেই অধিকার ফিরিয়ে দিতে বদলে দেব সব

কন্ঠ ছেড়ে গেয়ে ওঠো বদলে দেবার রব।

 

আমার পাশে কেউ যদি রয় একটু অনাহারী

আমার ভাগের খাবার আমি তাকেও দিতে পারি।

 

তখন জানি তার মুখেতেও ফুটবে চাদের হাসি

এসো সবাই বন্ধু হয়ে পরকে ভালোবাসি।

 

রক্ত দিয়ে যে দেশ পেলাম সে দেশ আমার মা

পৃথিবীতে কারো সাথে হয়না তুলনা।

 

বন্ধুসভার বন্ধু মোরা দাড়াই দুখীর পাশে

বারে বারে প্রথমআলোর চরকে মনে আসে।

 

চারিদিকে শুধুই পানি মাঝখানে কঘর

দানব হয়ে হানা দিলো সেখানে সিডর।

 

খড় মাচালীর কুড়ে ঘরের সবই গেল উড়ে

চির দুখী মানুষগুলির কপাল গেছে পুড়ে।

অনাহারে অনাহারে কদিন বলো কাটে

খাবার মত ভূট্টাকণাও নেই কোথাও মাঠে।

 

একশো তলা পাচশো তলা হাজার তলা বাড়ী

আমার পাশে কত জনের আছে দামী গাড়ী।

 

তবু কারো মন গলেনি ঐ মানুষের তরে

দুমুঠো চাল দেয়নি কেহ অনাহারীর ঘরে।

 

চীর দুখী মানুষ গুলো শুধুই কেদে কেদে

ঘাস কুড়ো আর লতাপাতা খেতো সবাই রেধে।

 

ইচ্ছে হতো নদীর বুকে ঝাপ দিয়ে সব মরি

আমরা কেবল বন্ধু হয়ে তাদের স্মরণ করি।

 

অনেক দূরে অনেক দূরে খাবার নিয়ে কাধে

সেই চরেতে গিয়েছিলাম করুন অবস্বাদে।

 

হাক ছেড়েছি কন্ঠে তখন কান্না ঝরে পড়া

বৃদ্ধ জোয়ান ক্ষুধার জ্বালায় হয়না নড়াচড়া।

 

কাছে গিয়ে ভালোবেসে নিয়েছিলাম খোজ

বলেছিলাম বন্ধু হয়ে আসবো ছুটে রোজ।

 

প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধুরা সব মিলে

তাদের হাতে সব দিয়েছি খোশমেজাজী দিলে।

 

বন্ধুসভার পরশ পেয়ে উঠলো কেদে নারী

কোন দিনো তোমাদেরে ভুলতে নাহি পারি।

 

কেউ আসেনি তোমরা এলে তোমরা কে হে শুনি   

প্রতিদিনই খাবার আশায় নিরব পথ গুনি।

 

কেউ আসেনি কেউ দেখেনি মোদের দুখ গুলি

সেই ব্যাথা সব মিশে গেছে সুদুর কর্ণফুলী।

 

আমরা যখন যাচ্ছি মরে সেই মরণের ক্ষণে

ভালোবেসে হাত বাড়ালে তোমরা বন্ধু জনে।

 

বন্ধুসভার বন্ধু মোরা আমরা বলেছিনু

আদর করে চুমু দিলো ছোট্ট মেয়ে মিনু।

 

সেই দুখীদের দুখ দেখে অশ্রুটলমল

দুখ গুলো ঘুচিয়ে দেব এক সুরে সব বলো।

 

ভালবেসে বললো ওরা সকল কিছু পর

আপন শুধু তোমরা এবং প্রথম আলোর চর।

 

প্রথম আলোর নাম মিশিয়ে প্রথম আলোর চর

আপন হাতে গড়েছিনু ওদের ভাঙ্গা ঘর।

 

একেই বলে বন্ধুসভা একেই বলে প্রিয়

এমন করে দুখের মাঝেও দুখীর খবর নিও।

 

বন্ধুসভার বন্ধু আমি চোখে অশ্রুকণা

দুখীর দুখে কাদতে পারে আছে আর কজনা।

 

আনন্দেতে জল এসে যায় গর্বে ফাটে বুক

দুখীর পাশে দাড়ানো যে সবচে বড় সুখ।

 

বাবা মায়ের আদর ফেলে ভাইকে ফেলে রেখে

ঈদ করেছি প্রথম আলোর চরকে মনে রেখে।

 

কুরবানীতে গরু নিয়ে চরে গিয়ে উঠি

সেমাই চিনি দুধ নিয়ে সব ঘরে ঘরে ছুটি।

 

সেইতো হলো সবচেয়ে সুখ সেইতো ভালোবাসা

বন্ধু হয়ে তাইতো সদা দুখীর পাশে আসা।

 

কোরবানীটা হয়ে গেলে গোস্ত নিয়ে হাতে

বন্ধু হয়ে সবার ঘরে পৌছি সাথে সাথে।

 

তখন দেখি সবাই খুশি সত্যিকারের ঈদে

সুখের বাতাস বইতে থাকে সেই দুখীদের হৃদে।

 

বৃদ্ধা এসে জড়িয়ে ধরে খেতে বলে সাথে

কেউবা আবার মায়ের মত খাওয়ায় নিজের হাতে।

 

এই যে আমি কি নাম আমার কেউ চেনেনা নামে

যেদিক তাকাই কেবল দেখি বন্ধু ডানে বামে।

 

বাচতে হলে জানতে হবে আমরা বলি রোজ

গরীব দুখী যেথায় থাকুক নিই সকলের খোজ।

 

মুখস্তকে না বলেছি গণিত আসর করে

আমরা সবার বন্ধু রবো সারা জীবন ভরে।

 

ত্রিশ হাজার বন্ধু এখন দাড়াই সবার পাশে

অকুতোভয় আমরা সবাই শ্রাবণ প্লাবণ মাসে।

 

ঐ যে দুখী রোমেলা তার ঘর ভেঙ্গেছে স্বামী

তখন থেকে কেবল শুধু দুখ আসে নামি।

 

হাত বাড়িয়ে আমরা দিলাম সেলাই মেশিন কিনে

সুখের পরশ তাহার ঘরে আসছে দিনে দিনে।

 

এমন করে সদাই মোরা শিখাই ভালোবাসা

সেই সারিতে বাদ পড়েনা কামার কুমোর চাষা।

 

হাসপাতালে সয্যাশায়ী সেলিম মিয়ার ভাই

এ পজেটিভ রক্ত লাগে কোথাও তা নাই।

 

ফোন আসলো সব ঠিক আছে কব্যাগ দিতে হবে

এ পজেটিভ ও নেগেটিভ লাগবে বলো কবে।

 

অচেনা সেই সেলিম মিয়ার ভাইয়ের শয্যাপাশে

বন্ধুসভার বন্ধুরা সব তখন ছুটে আসে।

 

সেলিম মিয়ার চোখে তখন অশ্রুটলমল

আনন্দে সে বললো তোমরা মানুষ না কি বলো।

 

এমন করে কজন পারে দুখীর দুখে কাদা

সবাই দেখে সম্মুখে তার পাহাড় সম বাধা।

 

রাতটা তখন অনেক গভীর জাগ্রত নেই কেহ

বিছানাতে সারা দিনের ক্লান্তি ভরা দেহ।

 

দরজাতে কড়া নাড়ে সজাগ আছো নাকি

বিপদ মাথায় দাড়িয়ে আছি কলিম পুরের বাকি।

 

তবু আমি উঠে পড়ি দরাজ দিলে বলি

কি হয়েছে শুনে তখন তার পিছনে চলি।

 

বাচ্চাটা তার ভীষণ অসুখ হাসপাতালে নেবে

গরীব মানুষ এতো টাকা কোথা থেকে দেবে।

 

তাই এসেছে বন্ধুরা সব করতে পারে জেনে

ঠিক তখনই হাসপাতালে খবর পাঠাই ফোনে।

 

ডা.ইকবাল ভাই কেমন আছেন ব্যাস্তনাকি কাজে

"কি যে বলো চলে এসো থেকোনাকো লাজে।"

 

বাচ্চাটাকে বুকে ধরে বন্ধুসভা ছোটে

গরীব দুখী বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটে।

 

এই আমাদের বন্ধুসভা বদলে গেছি আরও

ইচ্ছে হলে তুমিও এসে বন্ধু হতে পারো।

 

সাথে আছে প্রথম আলো আধার কেটে যাবে

স্বপ্ন দেখি সকল মানুষ ভাল খাবার খাবে।

 

অনাহারে কেউ রবেনা এই করেছি পণ

বন্ধু হয়ে সেবা দেব আমরা আজীবন।

 

সুখের দিনে অনেক মানুষ বন্ধু হতে পারে

দুখের দিনে পালিয়ে যাবে চিনে নিও তারে।

 

সুখে দুখে সকল সময় বন্ধু সভা থাকে

আপন ভেবে পথের শিশু বুকে ধর রাখে।

 

তারাই কেবল বন্ধু আপন বদলে দেবে তারা

নিজের সুখে তারা কভূ হয়না আত্মহারা।

 

সবার সুখে তারাই হাসে সবার দুখে কাদে

মানুষ গুলোর দুখ দেখে কাদে অবস্বাদে।

 

ওরাই হলো সোনার ছেলে ওরাই প্রেয়সীনি

দুখের দিনে পালিয়ে ওরা যায়না কোন দিনই।

 

দিন আগে সোনার দেশে সিডর দিলো হানা

সেই সিডরের লিলা খেলা সবার আছে জানা।

 

তখন কেবল চারিধারি শুধুই আহাজারি

বন্ধুসভার বন্ধুরাকি বসে থাকতে পারি।

 

সেই বিপদে অনাহারী সাবার পশে দাড়াই

সামনে যতই বিপদ আসুক দুই পা দিয়ে মাড়াই।

 

আহার নিয়ে ওষুধ নিয়ে কাপড় নিয়ে সাথে

আমরা ছুটি বন্ধু সভা দিনে এবং রাতে।

 

এমন করে কমাস গেলো ঘুম হয়নি মোটে

বন্ধুসভার বন্ধু তবু হাসি থাকে ঠোটে।

 

আমরা ভাবি আমায় নিয়ে দেশকে নিয়ে আরও

দেশ গড়ার এ মিছিলটাতে ভীড়তে তুমি পারো।

 

বদলে গেছি বদলাতে চাই বদলে দেব আরও

বন্ধু সভার বন্ধু ওরাও সাওতাল কি গারো।

 

কেবলতো ভাই দশটা বছর হাজার বছর বাচি

সকল সময় বন্ধু সভা দুখীর পাশে আছি।

 

বদলাতে চাই কালোবাজার বদলাতে চাই ঘুষ

বদলে গেছে আমেরিকা নেই সেখানে বুশ।

 

বদলাতে চাই নারীর মুখে এসিড মারার নীতি

সবার মাঝে  আনতে হবে ভালবাসা প্রীতি।

 

বন্ধুসভার বন্ধুরা সব শপথ করি তার

এসিড লেগে একটি মুখও ঝলসাবেনা আর।

 

জীবন দিয়ে কেনা এদেশ বদলে দিতে পারি

বন্ধুসভার সবাই মিলে শপথ করি তারই।

 

 

 

জাজাফী

এস এম হল,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মুভার্স,গণিত অলিম্পিয়াড।

 

Category: Computer | Views: 690 | Added by: zazafee | Rating: 0.0/0
Total comments: 0
Name *:
Email *:
Code *: